বিউরো ঃ- দায়িত্ব-সহকারে সন্তানকে বড় করা চাট্টিখানি কথা নয় (Parenting Tips)! বয়সের প্রতিটা ধাপে তাঁদের উপর নজরদারি প্রয়োজন। কী করছে, কোথায় যাচ্ছে- এ সবই নজর রাখা উচিত। যাতে কোনও বিপদে না-পড়ে। আর আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে তো কথাই নেই!
যুগ বদলালেও বেশির ভাগ ভারতীয় পরিবারে যৌনতা নিয়ে আলোচনা আজও একটা ট্যাবু।
বিশেষ করে, পরিবারের মা-বাবারা (Parenting Tips) সন্তানদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে একেবারেই স্বচ্ছন্দ নন। ফলে এই বিষয়টায় ছেলে-মেয়েদের একেবারেই পরামর্শ দিতে পারেন না অভিভাবকেরা (Parents)। আর যদি সন্তানের যৌনতার বিষয়ে আগ্রহ অথবা সেক্সটিং (Teen-Sexting) মা-বাবার কাছে ধরা পড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই অভিভাবকেরা প্রথমে খানিক হতবাক হয়ে যান, তার পরে সন্তানকে কঠোর ভাবে শাসন করেন। কিন্তু সেটা কি ঠিক?
সেক্সটিং কী?
সেক্সটিং (Sexting) আসলে সেক্স-টেক্সটিং। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ইদানীং এর বাড়-বাড়ন্ত। ফলে নতুন প্রজন্ম মজেছে সেক্সটিংয়ে। আসলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে নিজের সঙ্গী অথবা প্রেমিক-প্রেমিকাকে যৌনতা বিষয়ক মেসেজ, হট ছবি ও ভিডিও পাঠানো হয়।
এ বার বয়ঃসন্ধির (Teen-Sexting) দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অথবা বয়ঃসন্ধি পেরোনো বহু ছাত্র-ছাত্রীই তার স্কুলের সহপাঠী অথবা বন্ধুকে এই ধরনের ছবি অথবা ভিডিও পাঠিয়ে থাকে। এই রকম পরিস্থিতিতে তৈরি হলে যে কোনও মা-বাবাই অত্যন্ত ঘাবড়ে যান এবং অস্বস্তিতে পড়েন। তবে এই ধরনের পরিস্থিতি অত্যন্ত বুদ্ধির সঙ্গে মাথা ঠান্ডা রেখে সুন্দর ভাবে হ্যান্ডল করতে হবে। যাতে সন্তানের সঙ্গে মা-বাবার সম্পর্ক না-খারাপ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি কী ভাবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে হ্যান্ডল করা উচিত, সেই বিষয়ে রইল কিছু টিপস।
ঠান্ডা মাথায়:
প্রত্যেক অভিভাবকই নিজের সন্তানকে স্মার্ট বলে মনে করেন। তাঁরা ভাবেন যে, তাঁদের সন্তানরা এমন কোনও কাজ করবে না। ফলে অনেক সময় ছেলে-মেয়ে সেক্সটিং (Teen-Sexting) করতে গিয়ে ধরা পড়লে অনেক মা-বাবাই বিষয়টিকে পাত্তা দেন না। এটা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। সন্তান ধরা পড়লে তাই প্রথমে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে এবং বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। আর একটা বিষয়, সন্তানের উপর না-চেঁচামেচি করে বরং তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।
মুখোমুখি বসে আলোচনা:
সন্তানের সেক্সটিং (Sexting) ধরা পড়েছে, আর তাতে হয়তো আপনি রেগে প্রায় জ্ঞানশূন্য হয়ে গেলেন। তখন সেই মুহূর্তে একদমই কোনও রকম পদক্ষেপ করা ঠিক নেই। তাই দরকার হলে এক দিন সময় নিয়ে আগে নিজের মাথা ঠান্ডা করতে হবে। তার পর সন্তানের মুখোমুখি বসে সরাসরি কথা বলা উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েরা হয়তো অভিযোগ করবে যে, কেন মা-বাবারা তাদের গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করছে। তা সত্ত্বেও এই সংক্রান্ত বিপদ-আপদের ব্যাপারে সন্তানকে জানাতে হবে।
গণ্ডি এঁকে দেওয়া:
কিছু বিষয়ে সন্তানের জন্য একটা অদৃশ্য গণ্ডি এঁকে দিতে হবে। যেমন- ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আপনার সন্তান কতটা ব্যবহার করতে পারবে, অথবা দিনে কত ক্ষণ ব্যবহার করতে পারবে, সেই বিষয়ে একটা মাপকাঠি বানিয়ে দিতে পারেন। প্রয়োজন হলে সন্তানের পাঠানো টেক্সটের উপরেও নজরদারি চালাতে হবে। আর ছেলে-মেয়ে যদি কারও সঙ্গে ডেটিং করে, সে ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া উচিত। আর সন্তানকে জানিয়ে দিতে হবে যে, নিয়ম ভাঙলে কপালে কেমন ধরনের শাস্তি জুটবে।
আইনি সাহায্য:
হয়তো জানতে পারলেন যে, আপনার সন্তান কোনও ফাঁদে পড়েছে। তাঁকে নগ্ন ছবি অথবা হট ছবি পাঠানোর জন্য ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে নিজের সন্তানের পাশে থাকতে হবে এবং দেরি না-করে আইনি সাহায্য চাইতে হবে।