বিউরো ঃ- ববিশ্বজুড়ে এখনও অনেক উপজাতি আছে যারা সমাজের মূল স্রোত থেকে অনেক দূরে থাকতেই পছন্দ করে। এই উপজাতিদের নিজস্ব নিয়ম এবং রীতিনীতি আছে। এদের মধ্য়ে বেশিরভাগই প্রাচীন জনজাতি, যারা সভ্য় সমাজ থেকে এখনও বুহ দূরে। যাদের আচার-আচরণও অদ্ভুত ও আশ্চর্যজনক।এমনই এক জনজাতি হল পশ্চিম কেনিয়ার লুও উপজাতি।
এদের অনেকে জোনাগি বা ওনাগি বলেও ডাকেন। এদের পশ্চিম কেনিয়া ছাড়াও উগান্ডা এবং উত্তর তানজানিয়ার কিছু এলাকায় দেখা যায়। এই লুও জনজাতির মানুষজন তাঁদের বিচিত্র ঐতিহ্য় ও আচার-আচারণের জন্য বিখ্য়াত। তাঁদের সমাজে আজও বেশ কয়েকটি আজব রীতিনীতি রয়েছে। এরমধ্য়ে অন্য়তম মৃতদের সঙ্গে ঘুমোনো।অনেক আগে লুওদের মধ্যে একটি প্রথা ছিল, যেখানে বিধবা মহিলারা তাঁদের স্বামীর মৃতদেহের সাথে একই ঘরে ঘুমাতেন। তাঁদের ধারণা ছিল, এর ফলে বিধবা মহিলারা এমন একটি স্বপ্ন দেখবেন, যেখানে তাঁরা তাঁদের মৃত স্বামীর সঙ্গে প্রেম করছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে এইরকম স্বপ্ন একজন বিধবাকে বন্ধন থেকে মুক্তি দেয়। ফলে তাঁরা আবার বিয়ে করতে পারবেন। এই প্রথা নারীদের পরিশুদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়।
এই লুও জনজাতির মধ্য়ে যৌনসঙ্গমকে এক বিশেষ রীতির মধ্য়ে ধরা হয়। যৌনতা এদের কাছে শুধুমাত্র সন্তান প্রসব বা বিনোদনের বিষয় নয়। যৌনতা এই লুও জনজাতির কাছে আরও বড় বিষয়। ওই এলাকায় লড়াইয়ের সময় একজন মহিলার জন্য তার স্বামীকে রান্নার লাঠি দিয়ে আঘাত করা নিষিদ্ধ। এবং এটা যদি হয়, তাহলে তাঁরা একটি বিশেষ রীতি পালন করেন। ওই দুজনকে প্রচুর পরিমাণে একটি ভেষজ পানীয় পরিবেশন করতে বাধ্য করা হয়, যা ‘মানিয়াসি’ নামে পরিচিত। তারপরে, মাতব্বররা ওই দম্পতির মধ্যে উত্তেজনা কাটানোর জন্য বাধ্যতামূলক যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার আদেশ দেন।লুও জনজাতির কাছে যৌনতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ফসল রোপণ এবং তোলার মরশুমে। এই জনজাতিদের মধ্য়ে বহুবিবাহ প্রথা প্রচলিত। এই জনজাতির পরিবারের প্রধান অবশ্য়ই তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হবেন ফসল রোপণ করার সময়। এরপর বাকি স্ত্রীরা যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হবেন স্বামীর সঙ্গে ফসল বেড়ে ওঠার সঙ্গে। মূল রীতি হল, জমিতে ফসল রোপণ করার আগের দিন পরিবারের প্রধান তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসঙ্গম করবেন। এটি সবসময় এমন পুরুষদের জন্য সুপারিশ করা হয় যারা আর যৌন সক্রিয় নয় এবং তাদের স্ত্রীদের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে বেশি সময় নেয়।
লুও জনজাতির মধ্য়ে যারা আত্মহত্য়া করেন, তাঁদের জন্য় রয়েছে এক বিশেষ শাস্তি। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ওই আত্মহননকারীর দেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়, এবং নামিয়ে আনার আগে তাঁর দেহে বেত্রাঘাত ও চাবুক মারা হয়। এই মৃতদেহকে তাঁরা গুণ্ডা বলে ডাকেন। পাশাপাশি লুও জনজাতির ছোটদের বিয়ে আগে হবে না।