বিউরো ঃ-মসজিদের পাশেই বিরাট মণ্ডপ তৈরি হয়, এখানেই ঘটা করে হয় দুর্গাপুজো। শুধু কী তাই, পুজো কমিটির অনেক সদস্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে গেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমনই নিদর্শন দেখতে পাবেন কল্যাণ সঙ্ঘে। যেখানে ধর্ম নয়, নিষ্ঠাটাই বিচার্য।এবছর ৬৯ বছরে পা দিল কল্যাণ সঙ্ঘের পুজো। প্রতিবারের মতো এবারেও সাবেকিয়ানার ছাপ থাকছে প্রতিমায়। তবে মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বিশেষ থিমকে মাথায় রেখে।
গত দু’বছরে বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। কোভিডের সঙ্গেই রীতিমতো লড়়াই করে জনজীবনকে বাঁচিয়ে তুলছেন যারা কল্যাণ সঙ্ঘের উদ্যোক্তারা এবছরও তাঁদেরই সম্মান দিতে চলেছে। কোভিড যুদ্ধে চিকিত্সক, নার্স, পুলিশ, সাংবাদিক, সাফাইকর্মীদের অবদান ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপের পরখে পরখে। থিমের নাম রিয়েল হিরোস অর্থাত্ সত্যিকরের নায়ক। প্রতিমার সামনে রাখা জাগ-প্রদীপের ন্যায় মণ্ডপেও এমন একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা হবে সারাক্ষণের জন্য। কোভিড যুদ্ধে শহিদ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতেই এই বিশেষ উদ্যোগ বলে জানালেন ক্লাবের সম্পাদক অভিজিত্ দাস।পুজো কমিটির সম্পাদক সীতানাথ ঘোষ। তিনি জানান, এই দুর্গাপুজোকে ঘিরে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত আগে। তবে কোভিডকালে গতবছর থেকে সেই সমস্ত অনুষ্ঠান স্থগিত রয়েছে। এবার অবশ্য লকডাউনে দুঃস্থদের খাবার দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল পুজো কমিটির সদস্যরা। একাধারে এলাকার সমস্ত বাসিন্দাদের ভ্যাকসিনে তদারকির পাশাপাশি মণ্ডপসজ্জার কাজে নিযুক্ত কর্মীদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এই পুজোর নজরকাড়ার বিষয়টি হল, পুজো কমিটিতে রয়েছেন বেশ কয়েকজন মুসলিম সদস্য। শুধু সদস্যই হয়ে থাকা নয়, রীতিমতো পুজোর কাজে সক্রিয় তাঁরা। তাঁদের মধ্যেই একজন রিঙ্কু শেখ এবার প্রতিমার নাকছাবি দিচ্ছেন। রোহন শেখ নামে আরও এক তরুণ সদস্য নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিজ্ঞাপনের যাবতীয় দায়ভার। সম্প্রীতির অন্যন্য উদাহরণ চাক্ষুশ করতে চাইলে আপনাকে যেতেই হবে বহরমপুর কল্যাণ সঙ্ঘের পুজো দেখতে।