প্রযুক্তি

মঙ্গলের পাড়ায় সাত বছর ”মম”, কি কি দেখলো ভারতের ”মম”????

  • বিউরো ঃ- দীর্ঘ সাত বছর ধরে চর্কি পাক দিচ্ছে। সেই ২০১৩ সালের নভেম্বরে পৃথিবী থেকে যাত্রা করেছিল। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরেই মঙ্গলের কক্ষে পা রাখে ইসরোর মঙ্গলযান মম (মার্স অরবিটার মিশন)। আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার পরে মঙ্গল-অভিযানের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে মঙ্গলযান।পরবর্তী মঙ্গল-অভিযানের জন্য তৈরি হচ্ছে ভারত। দ্বিতীয় মঙ্গলযাত্রা হবে ২০২২-২৩ সালেই। লাল গ্রহের রহস্যের খোঁজে ফের ছুটে যাবে ইসরোর মার্স অরবিটার মিশন ২ বা মম ২। তার আগে একবার দেখে নেওয়া যাক, ‘মম’-এর চোখ দিয়ে মঙ্গলকে ঠিক কেমন ভাবে দেখেছে ইসরো। ভারতের মঙ্গলযাত্রার সূচনা হয় ২০০৮ সালেই। সেই সময় চন্দ্রযান ১ নিয়ে প্রস্তুতি চলছিল পুরোদমে। প্রথম চন্দ্রাভিযানের পরেই ইসরোর দ্বিতীয় মিশন যে মঙ্গল-অভিযান, সেটা ঘোষণা করেন ইসরোর তত্‍কালীন চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার। তখন অবশ্য এই মিশনের কোনও নাম ছিল না। ২০১০ সালে কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইআইএসটি) মঙ্গলযাত্রার খুঁটিনাটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। ভারতের মঙ্গলযাত্রার নাম দেওয়া হয় ‘মার্স অরবিটার মিশন’ (MOM)। ২০১৩ সালে ইসরোর চেয়ারম্যান কেপি রাধাকৃষ্ণান ঘোষণা করেন ২৮ অক্টোবর পৃথিবীর মাটি ছাড়িয়ে উড়ে যাবে ‘মম’। তবে প্রযুক্তিগত কারণের জন্য ‘মম’-এর উত্‍ক্ষেপণ পিছিয়ে যায় ৫ নভেম্বর।ইসরোর মঙ্গলযান আসলে অরবিটার। কক্ষপথে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করাই এর কাজ। ‘মম’-এর শীরে বসানো পাঁচটি যন্ত্র— মিথেন সেন্সর (MSM), মার্স কালার ক্যামেরা (MCC), লেম্যান অলফা ফোটোমিটার (LAP) মার্স এক্সোফেরিক নিউট্রাল কম্পোজিসন অ্যানালাইজার (MENCA), থার্মাল ইনফ্র্যারেড ইমেজিং স্পেকট্রোমিটার (TIS) মঙ্গলের মাটির গঠন, চরিত্র, আবহাওয়ার প্রকৃতি, বাতাসে মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব, বাযুমণ্ডলে অ-তরিদাহত কণার গবেষণা চালাচ্ছে। মঙ্গলযান ‘মম’ দেখিয়েছে, মঙ্গলে দিন-রাত আছে, ঋতু পরিবর্তন আছে, আছে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু, খুব উঁচু পাহাড় আছে, বিরাট আগ্নেয়গিরি আছে, বিশাল নদীখাতও আছে, যা একদা সেখানে জল থাকার প্রমাণ দেয়। মম-এর মার্স কালার ক্যামেরা প্রথম ছবি তুলে পাঠায় ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই। তার পর থেকে এখনও অবধি হাজারেরও বেশি ছবি এবং ডেটা পাঠিয়েছে ভারতের মঙ্গলযান। মঙ্গলপৃষ্ঠ (Mars Surface) থেকে ২৫৫৫ কিলোমিটার উচ্চতায় ১৩২,৮ মিটার রেজোলিউশনের প্রথম ক্রেটার বা গহ্বরের ছবি তোলে মঙ্গলযান ‘মম।’ মঙ্গলের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত গেইল ক্রেটারের খোঁজ ছিল মম-এর অন্যতম সাফল্য। লাল গ্রহ বরাবরই পাথুরে আর বরফে মোড়া ছিল বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের যে ধারণা বদ্ধমূল ছিল তাকেই ভেঙে চুরমার করে দেয় ‘মম।’ তার পাঠানো তথ্য থেকেই বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে মঙ্গলের উত্তর গোলার্ধে ‘অ্যারাবিয়া টেরা’য় প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে বইত বড় বড় নদী। আয়তনে এই ‘অ্যারাবিয়া টেরা’ একটা সুবিশাল এলাকা মঙ্গলে। প্রায় একটা ব্রাজিলের মতো। ভারতের মঙ্গলযান মৃত নদীর কথা বলেছিল, এখন মঙ্গলের মাটিতে জলের অস্তিত্ব খুঁজতে এই চেষ্টাই চালাচ্ছে নাসার পারসিভিয়ারেন্স। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা ‘সুখপাঠ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *