হানিট্র্যাপের ফাঁদে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুরে। গত ৬ অক্টোবর বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ। হরিদেবপুরে ফের এমন কাণ্ড ঘটায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার সত্যতা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃত ওই যুবকের পরিবারের দাবি, ঘটনার আগে বেশ কয়েকদিন ধরেই ভীষণ অন্য মনস্ক ছিলেন ওই যুবক। বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছিলেন। কাজকর্মও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকি বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখাও করতেন না। পরিবারের সদস্যরা বারবার তাঁর কাছে এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলেও কাউকে কোনও কথা বলতে পারেননি তিনি।
পরে নিজের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে গোটা বিষয়টি তিনি খুলে জানান। বলেন, কয়েক মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। দু’জনের মধ্যে ভালই কথাবার্তা হচ্ছিল। এরই মধ্যে ওই মহিলা একটি নগ্ন ছবির সঙ্গে এডিট করে ওই যুবকের মুখ বসিয়ে দেয়। তারপর সেই সুপার ইম্পোজ ছবি পাঠিয়ে যুবককে নানাভাবে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে ওই মহিলা। যুবকের থেকে এমনটাই জানতে পারে ওই বন্ধু। তিনিই বিষয়টি পরে যুবকের পরিবারকে জানান।
এমনকী এই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে যুবকের কাছে মোটা টাকাও দাবি করা হয়। কিছুদিন আগে বাধ্য হয়ে তিনি ওই মহিলাকে ৬ হাজার টাকা দেন বলেও পরিবারের তরফে জানানো হচ্ছে। অভিযোগ, এরপর আরও বেশি টাকার জন্য ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে ওই মহিলা। শেষে লোকলজ্জার ভয়ে ভেঙে পড়েন যুবক। অবশেষে গত ৬ তারিখ নিজের ঘরেই গলায় দড়ি দেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। যেহেতু ওই যুবকের বন্ধুটিই সবার আগে বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন এবং তিনিই পরিবারের সদস্যদের গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলেন, তাই পুলিশ ওই বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বর্তমান সময়ে অনলাইন প্রতারণা চক্র কীভাবে নিজেদের জাল বিস্তার করছে এবং সাধারণ মানুষকে সেই ফাঁদে ফেলছে, হরিদেবপুরের ঘটনা তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।