প্রযুক্তি Blog

ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা।

জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর

এই বানীটা শোনেনি এমন মানুষ হয়তো বিরল। কারণ এটি এমনি একজন মহাপুরুষ, যার কথা সর্বদা আমাদের মনের হৃদয়ে গাঁথা। হ্যাঁ আমি সেই মহান পুরুষের কথা বলছি যিনি মানুষের অন্তরে সত্য পথে চলার সাহস জাগিয়ে তুলেছিলেন। যিনি আমাদের মনের অন্তরে চিরজীবন অমর হয়ে আছেন এবং চিরকাল থাকবেন। তিনি হলেন স্বামী বিবেকানন্দ।

আজকে আমরা এই জ্ঞানী পুরুষের সম্পর্কে আলোচনা করব, যার কথা আমরা শৈশব থেকে বইয়ের পাতায় পড়ে এসেছি । তাই আজকের এই নিবন্ধটি আমাদের স্কুল পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য। আজকের এই প্রবন্ধে তাদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের রচনা রইল যা খুব সহজ এবং সরল। আসুন তাহলে জেনে নিই সহজ ভাষায় স্বামী বিবেকানন্দের রচনা।

১. ভূমিকা (Introduction)

বাঙালির কাছে স্বামী বিবেকানন্দ একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। ভারতের মহান পুরুষদের মধ্যে তিনি অন্যতম। যখন ভারত ইংরেজদের দাসত্বে ছিল সেই সময় আমাদের ভারত মা একজন মানুষকে জন্ম দিয়েছিলেন, যিনি শুধু আমাদের ভারতের নয় প্রত্যেক মানবতার গৌরব। এই মহান জ্ঞানী মানুষজন্য সমগ্র ভারত গর্বিত।

২. স্বামী বিবেকানন্দের রচনা – শৈশব (Childhood) 

স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৩ সালে ১২ ই জানুয়ারি। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্র নাথ দত্ত। ছোটবেলায় সবাই তাকে বিলে বলে জানতো। শৈশব থেকে তিনি খুব চঞ্চল এবং মেধাবী প্রকৃতির বালক ছিলেন। উত্তর কলকাতায় একটি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত এবং স্বামী বিবেকানন্দের মা ছিলেন ভুবনেশ্বরী দেবী। বিশ্বনাথ দত্ত কলকাতার আদালতের একজন উকিল ছিলেন। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব সাহসী ছিলেন।

৩. স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষাজিবন (Swami Vivekananda’s educational life) 

নরেন তার মায়ের কাছ থেকে প্রথম ইংরেজি এবং বর্ণমালা শিখেছিলেন। কলকাতার মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে তার স্কুল জীবনের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। পড়াশুনোর প্রতি তার চিরকাল গভীর আগ্রহ ছিল এবং বলাই বাহুল্য তিনি একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৮৭৯ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ম্যাট্রিক পাশ করে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং তার পর স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হন দর্শন নিয়ে পড়াশুনো করার জন্য। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়। গীতা, বেদ, উপনিষদ তার প্রচুর আগ্রহ ছিল। ধ্যান ধারণায় আগ্রহী ছিলেন এবং কেশব চন্দ্র সেনের নেতৃত্বে তিনি ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি কলকাতা থেকে বি.এ পাস করেন পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতি বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন শুরু করে। প্রচুর গবেষণা করে এবং নিজের মনের সত্য জানার জন্য সচেতন হয়ে পড়েন। তবে গবেষণার পরেও তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না।

৪. স্বামী বিবেকানন্দের রচনা – কর্মজীবন (Career)

‘মানুষের মধ্যে ঈশ্বর রয়েছে এই বিশ্বাস তিনি নিজের মনে গেঁথে নেন। সারা ভারত ভ্রমণ করেন স্বদেশ প্রেমে মুগ্ধ হয়ে নিজের জাতি নিজের দেশকে সকলের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন ভাষা এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে তিনি নিজের এক নতুন রূপ গঠন করেন এবং নিজেকে তৈরি করেন মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে। শহর শহর ঘুরে ঘুরে মানুষকে তিনি দেশের প্রেম, সংস্কৃতি এবং ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন।  ১৮৯৭ সালে ১ লা মে কলকাতায়  প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মঠ। তার মূল আদর্শই ছিল সাধারন মানুষের সেবা করাই। তারপর স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড়ে তৈরি করেন বেলুড় মঠ। যা আজও বিখ্যাত।৷

সকল ভারতবাসীর দুঃখ দুর্দশা উপলব্ধি করেন তিনি। সাধারন ভারতবাসীর অশিক্ষা, দারিদ্রতা তাকে বেদনাদায়ক করে তোলে। শুধুমাত্র দেশের বিভিন্ন জায়গায় নয় বরং দেশের বাইরে তিনি আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন।

১৯৮৫ সালে যখন জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক যুব বছর হিসাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেই বছর থেকে, ভারত সরকার স্বামী জি জন্মবার্ষিকী হিসাবে ‘স্বামী জাতীয় দিবস’ উদযাপন ঘোষণা করে। একটি মহান উৎস স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর জীবন এবং তার আদর্শের দর্শন হল ভারতীয় যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণা।

৫. উপসংহার (Conclusion) 

১৯০২ সালে ৪ ঠা জুলাই স্বামী বিবেকানন্দ দেহ ত্যাগ করেন। ইতিহাসের পাতায় বাঙালিদের রত্ন তিনি। তার বানী আজও মানুষের অন্তরে প্রেরণা জাগায় । আমাদের যুব সমাজ ওনার বানী স্মরণ করে সংগ্রাম করে যাচ্ছে আজও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *