বিউরো :- এটিএমের ভেতর বয়স্ক মহিলাকে সাহায্যের নামে বিভ্রান্ত করে তুলে নেওয়া হল ৯০ হাজার টাকা। গল্ফ গ্রীনের সেন্ট্রাল পার্কের পাশে একটি আবাসনে থাকেন ৭৪ বছরের সংঘমিত্রা ঘোষ। শনিবার বেলা বারো’টার কিছু আগে ছেলে বোধিস্বত্বা ঘোষের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কার্ড নিয়ে বাড়ির কাছেই এসবিআই এটিএম-এ টাকা তুলতে যান। ওই এটিএমে এক সঙ্গে দুটি টাকা তোলার মেশিন এবং একটি পাসবুক আপডেট করার মেশিন রয়েছে। সংঘমিত্রা ঘোষ এটিএম-এ পৌঁছলে সেখানে তখন বাইরে একজন লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির কাছে তিনি জানতে চান ভেতরে কেউ আছে কিনা। এরপর দু-জনের মধ্যে আরও দু-একটি কথাবার্তা হয়।
এরপর ভেতর থেকে একজন বেরিয়ে এলে সেই ব্যক্তি সংঘমিত্রা ঘোষকে আগে যাওয়ার জন্য বলেন।
সংঘমিত্রা ঘোষ বলেন, ‘ভেবেছিলাম আমাকে বয়স্ক মানুষ দেখে আগে ছেড়ে দিচ্ছে বোধহয়।’ সেইমতো তিনি ভেতরে যান এবং ১০,০০০ টাকা তোলেন। টাকা তোলার পর যখন বের হতে যাবেন তখন ওই ব্যক্তি হঠাত্ চিত্কার করে বলেন এটিএম মেশিনে ক্যানসেল বোতাম টেপার জন্যে। তাতে কিছুটা ঘাবড়ে যান সংঘমিত্রা দেবী। তিনি বলেন, ‘এটিএমের কিপ্যাডের লেখাগুলো অস্পষ্ট থাকায় ঠিক করে বুঝতে পারছিলাম না। তখন সেই ছেলেটি এগিয়ে এসে সাহায্য করে। তারপর বলে ও দেখেছে আমার টাকা তোলার সময় নাকি দু’বার ডেবিট হয়েছে। কিন্তু আমি টাকা তুলেছিলাম একবারই। তখন সে বলে মিনি স্টেটমেন্ট বের করে দেখে নিতে। মিনি স্টেটমেন্ট বের করে দেখি যে একবার ডেবিট হয়েছে। তারপর বাড়ি চলে আসি। ঘন্টা দুয়েক পরে আমার ছেলে আবিষ্কার করে কী কাণ্ডটা ঘটেছিল।’
বৃদ্ধার ছেলে বোধিসত্ব ঘোষ বলেন, অফিসের একটা মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় পরপর কয়েকটা এসএমএস এলেও ঠিক করে দেখতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘দু’ঘণ্টা পর এসএমএস চেক করতে গিয়ে দেখি যত ব্যালেন্স অ্যাকাউন্টে থাকা উচিত তার থেকে অনেক কম রয়েছে। মার কাছ থেকে এটিএম কার্ডটা হাতে নিয়ে দেখি ওটা অন্য কোনও এক ব্যক্তির নামে কার্ড। আমার কার্ডটি যে বেসরকারি ব্যাঙ্কের এই কার্ডটিও সেই একই ব্যাঙ্কের। ফলে দুটো কার্ডের রং-সহ অন্যান্য জিনিসগুলো হুবহু এক। ফলে আমার আর তখন বুঝতে বাকি ছিল না ঘটনাটি কী ঘটেছে। সঙ্গে সঙ্গে কল সেন্টারে ফোন করে জানতে পারি মা ১০,০০০ টাকা তোলার পর আরও ৯০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে।’
তখনই তারা গল্ফগ্রীন থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। ওই এটিএমে ঢোকার মুখে দু-টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সংঘমিত্রা ঘোষ বলেন, ‘আমি যখন মিনি স্টেটমেন্টের জন্য পিন দিচ্ছিলাম সম্ভবত তখন ওই ছেলেটি সেটা দেখে ফেলে এবং স্টেটমেন্টটা দেখার সময় সে আমার কার্ডটি বদলা নিয়েছিল। ছেলেটার মুখে মাস্ক ছিল না। পুলিশ চাইলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওকে চিহ্নিত করতে পারে।’